– এসে গেছি প্রভু!
– কে হে বাপু তুমি? তোমার নাম কি?
– আমি আপনার একজন ভক্ত প্রভু, নম্বর ৪৩২১ – এটাই আমার পরিচয়, অন্য নামটাম নেই।
– ওঃ আচ্ছা! কিন্তু নাম না থাকার কারণটা কি?
– প্রভু, আমাদের সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে শুধু আপনি, আপনার পরিচয়ই আমাদের পরিচয়, অন্য নাম আমাদের দরকার নেই।
– হুম! বুঝলাম! তা তোমার হাতদুটো লাল কেন?
– ওটা বদ রক্ত প্রভু!
– রক্ত? তাও আবার বদরক্ত? মানেটা ঠিক বুঝলাম না তো!
– যারা আপনাকে বিশ্বাস করেনা, আপনার কথা শোনেনা, আপনাকে নিয়ে ইয়ার্কি করে, অপমান করে, তাদের আমরা বলি দিই, এ রক্ত তাদেরই।
– বলি দাও? কিন্তু কেন?
– বলি দেওয়াই তো উচিৎ প্রভু। এদের তো বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই! এরা আপনাকে মানেনা, অর্থাৎ এরা আপনার শত্রু, তাই আমাদেরও শত্রু। শত্রুর শেষ কি রাখতে আছে?
– কিন্তু… কিন্তু আমি তো এদের শত্রু বলে মনে করিনা!
– কি বলছেন প্রভু? এরা আপনার আজেবাজে ছবি আঁকে, আপনাকে নিয়ে ছড়া কাটে, তাও আপনি বলছেন এরা আপনার শত্রু নয়?
– না, নয়। এদের ছড়াগুলো তুমি পড়োনি? খুব মজার! ছবিগুলোও আমার খুব পছন্দ হয়েছে। খুব হেসেছি। তুমি কি এদের মেরে ফেলেছ?
– আলবাৎ। না মেরে উপায় কি?
– কি বলছ হে? এই নিরীহ প্রাণীদের তুমি হত্যা করেছ?
– আমি একা নই, আমার সঙ্গে আরো অনেকে আছে।
– তোমাদের উদ্দেশ্যটা কি? কতগুলো নিরীহ প্রাণ নষ্ট করে তোমরা কি পাবে?
– আমাদের চাহিদা খুব সামান্য – দুনিয়ার সবাইকে আপনার ভক্ত হতে হবে। যারা ভক্ত হবে না, তারা কেউ এই দুনিয়াতেও থাকবেনা।
– কি সাংঘাতিক কথা বলছ তুমি! কিন্তু কেন? আমি তো এসব চাইনা!
– আমরা চাই। ভক্তকুলের এই আবদার তো আপনাকে মেনে নিতেই হবে প্রভু। তাছাড়া দুনিয়াজোড়া সবাই শুধু আপনার নামে জয়জয়কার করছে, এই দিনটা কি আপনার দেখতে ইচ্ছা করেনা প্রভু?
– না করেনা। আমি চাইনা সবাই শুধু আমাকে নিয়েই মেতে থাকুক। কত্ত ভাল ভাল জিনিস আছে দুনিয়ায়, সবাই সেগুলো উপভোগ করুক। সবাই সবাইকে ভালবাসুক, সুখে থাকুক, আনন্দে থাকুক – তাহলেই আমার আনন্দ, আমি সেই দিনটাই দেখতে চাই।
– এসব কি বলছেন প্রভু? আমরা, যারা আপনার ভক্ত, তারা আপনার নাম সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতে চাই। তার জন্য যে কোনো মূল্য দিতে আমরা তৈরি, যে কাউকে সরিয়ে দিতেও আমরা পিছপা হব না!
– এ কি সর্বনাশা খেলা আরম্ভ করেছ তোমরা? শিগগিরি এসব বন্ধ কর।
– প্রভু, আমাদের এই মহান আদর্শকে ‘খেলা’ বলে অপমান করবেন না। মনে রাখবেন, লক্ষ্যে না পৌঁছনো পর্যন্ত আমাদের কেউ থামাতে পারবে না।
– দোহাই তোমাদের! তোমরা কেউ আমার ভক্ত নও। আমার সত্যিকারের ভক্তরা এরকম কাজ করতেই পারেনা। একটু আগেই রাম আর হ্যারির সঙ্গে এই নিয়ে কথা হচ্ছিল, ওরাও ওদের ভক্তদের নিয়ে খুব চিন্তিত।
– প্রভু, আপনি ওদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন? ওরা তো আমাদের শত্রু!
– কি বলছ হে! ওরা আমার বন্ধু। ইনফ্যাক্ট, ওদের আর আমার মধ্যে কোনোই তফাত নেই। তোমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।
– মাথা আপনার খারাপ হয়েছে প্রভু। শত্রুপক্ষের সঙ্গে যে হাত মেলায়, তাদের কিন্তু আমরা ছেড়ে দিই না, সে যে-ই হোক। আদর্শের থেকে কেউ বড় নয়, এমনকি আপনিও নন।
– তুমি কি আমাকে হুমকি দিচ্ছ?
– নাঃ, হুমকি আমরা দিইনা। আমরা কাজে বিশ্বাসী।
– এ কি? ওটা কি? কি করতে চাইছ তুমি? থামো!
– আমাদের আদর্শের বিরুদ্ধাচরণ করার অপরাধে আপনাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘুম পাড়িয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছি, কেননা আপনি ঘুমিয়ে থাকলেই আমাদের লাভ! আমাকে ক্ষমা করবেন!
Apt, crisp and relevant. Jomiye diyechho Prabhu..
অনেক ধন্যবাদ গুরুদেব। 🙂
কমেন্ট পেয়ে ভাল লাগলো।
Sotto takey osshikar korar aar upay nei.. one vs ekhon many. Sobar ekhon common shotru. Jotodin na ei bhoktokul shanto hocche, totodin onno bhoktokul ke dosh diye labh nei. Actually eder chalona kore kichu highly qualified lokjon aar execution e rakha hoeche ekdom school na jawa lokjon ke..Tatey ja howar tai hocche..sishu , mohila, briddho etc kichui baad rakche na.
খুবই সত্যি কথা বলেছিস বন্ধু, দুঃখের হলেও এটাই এখন বাস্তব!
ভাল লিখেছ। অল্প কথায় সত্যি কথাটা। চালিয়ে যাও।
ধন্যবাদ দাদা। 🙂
asadharan lekha
dharmer naame hatya lilla cholchche taar biudhdhe tomar lekha ekta pratibaad.
ধন্যবাদ টুবুন। 🙂
সত্যিই, ধর্মের নামে যাচ্ছেতাই কারবার চলছে সারা দুনিয়ায়…
Thaambena bodh hoy aare..oi ghum paaRiye raakhbe…:-( bibek, buddhi sob kichhukei…darun likhechho..
একদম ঠিক বলেছ…সব ঘুমের দেশেই চলে যাবে বলে মনে হচ্ছে! 😦
ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ।